পৃথ্বীরাজের অরেঞ্জের মাথায় গোবর ঢালা! এবার দেখিয়ে দেবে মানিকের বউকে অপদস্ত করার শাস্তি! দস্যি মানিক আর শান্ত কমলার রসায়নে মুগ্ধ দর্শক
বেশ কিছু সপ্তাহ হল শুরু হয়েছে স্টার জলসার(Star Jalsha) নয়া ধারাবাহিক কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজ(Kamala O Sriman Pritthiraj)। তৎকালীন এই ধারাবাহিকে তুলে আনা হয়েছে ইংরেজ আমলের এক জমজমাট কাহিনী। তবে ইংরেজ আমলের কাহিনী মানে যে সেখানেই দুঃখ দুর্দশা ভারতীয়দের উপর তীব্র অত্যাচার সেই সমস্ত নয়। বরং এক দস্যি বালক কিভাবে ইংরেজদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে সেই কাহিনী তুলে ধরেছে জলসা।
সেখানে নেই কোন কুটকচালী, নেই কোন পারিবারিক দ্বন্দ্ব, পরকীয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। জনৈক লেখক বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় গল্প পৃথ্বীরাজের কাহিনী অবলম্বনে এর আগে বড় পর্দায় এই ছবি এনেছিলেন তরুণ মজুমদার। এবার ছোট পর্দায় দর্শকদের আনন্দ দিতে ১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এই ধারাবাহিক সন্ধে সাড়ে ছটায়।
এই ধারাবাহিক যারা দেখেন তারা জানেন কমলা এক শিক্ষিত শান্ত জমিদার বাড়ির মেয়ে। তার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দস্যি মানিকের। সে আবার নিজেকে শ্রীমান পৃথ্বীরাজ মনে করে। ছেলের দুরন্তপনা রুখতে বাবা বিয়ে দিয়েছে জমিদারের মেয়ের সঙ্গে। তারপরেও শ্রীমান দমে যাবার ছেলে নয়। বরং ফুলশয্যার ঘরে নিজের বন্ধুদের বাঁচাতে বউয়ের কান ধরে টেনে বাইরে এনেছে বাবার কাছে। তুলে ধরা হয়েছে সেই সময়কার নারী স্বাধীনতার হস্তক্ষেপের দিকগুলি।
সেই সময় মেয়েদের শিক্ষার কথা ভাবাই যেত না। এমনকি নানা রকম কুসংস্কার গুটিয়ে দেওয়া হতো মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে। কিন্তু কমলা যেহেতু জমিদার বাড়ির মেয়ে এবং তার বাবা ইংরেজি ঐতিহ্য ঘেঁষা তাই তাকে বাড়িতে শিক্ষক রেখে পড়াশোনা করিয়েছে ইংরেজি গান শিখিয়েছে। সম্প্রতি ধারাবাহিকের একটি প্রমো ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে। কমলা ইংরেজি গান গাইছে আর তাকে দেখে সকলে অবাক হয়ে যায়।
সে বলে মেম সাহেব তাকে এই গান শিখিয়েছে। এরপর তার শাশুড়ি তাকে জিজ্ঞাসা করে লেখাপড়া জানে কিনা তার উত্তরের সে জানিয়েছে হ্যাঁ। এরপরেই তাকে বলে,’ লেখাপড়া করলে বর মরে যায় জানিস নে’? এই দেখা যায় ইংরেজি গান গাওয়ার অপরাধী তার মাথায় গোবর ঢেলে প্রায়শ্চিত্ত করানো হচ্ছে।
যা দেখে প্রতিবাদ জানিয়েছে শ্রীমান। বলে,’ আমার অরেঞ্জকে গোবর খাওয়াবে দেখো আমি কি করি’! এই প্রমো দেখে একজন লিখেছেন,’ নোবিংশ শতাব্দীর মেয়েদের সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থান তুলে ধরেছে কমলা ও শ্রীমান পৃথ্বীরাজ ধারাবাহিকে। এই গল্পে একটু হলেও চিত্র তুলে ধরা হয়েছে যে শুধুমাত্র নারী হয়ে জন্মানোর জন্য নারীদের কোন চোখে দেখা হয়। অবশ্য এই সময় আরো আগে মেয়েদের অবস্থান আরো শোচনীয় ছিল। যা আমরা বিভিন্ন প্রবন্ধ উপন্যাসের দৌলাতে জেনেছি। কিন্তু এই গল্পে দেখানো হবে কিভাবে কমলা ও মানিক একে অপরের পাশে থেকে সমাজের এসব গোঁড়ামি ও কুসংস্কার প্রথাকে ভেঙে নবজাগরণের সৃষ্টি করবে। তোকেও বলবে না গল্পে কুটকচালি দেখানো হচ্ছে। এসব কিন্তু একসময়ের বাস্তব চিত্র’।
