বাংলা সিরিয়াল

‘মৌকে চড় মারতে হবে শুনেই মেয়েবেলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন রূপা গাঙ্গুলী!’তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে দর্শক বলছেন টিআরপির জন্য বীথির চরিত্রকে এতটা নোংরা না বানালেও পারতো!

রূপা গাঙ্গুলী মেয়ে বেলা ছাড়ার পর থেকে রীতিমতো হইচই শুরু হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়, কারণ জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর জায়গায় অন্য কোন মুখে বিথী চরিত্রে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে দর্শকের, বিথী মানেই দর্শক রূপা গাঙ্গুলীর চরিত্রকে ভেবে নিয়েছেন সেই জায়গায় রূপা গাঙ্গুলি হঠাৎ করে ছেড়ে দিয়ে অনুশ্রী দাস এলেও দর্শকের মনে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয় , কেন সকলের নয়নের মনি জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী মেয়ে বেলা ছাড়লেন? অবশেষে তার উত্তর দিলেন রূপা গাঙ্গুলী। মেয়ে বেলা ছাড়ার কারণ প্রকাশ্যে আনলেন তিনি।

একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান,“ধারাবাহিকে যে অসভ্যতা দেখানো হচ্ছে তা আমি মানতে পারছিলাম না, এই সময়ে দাঁড়িয়ে একটা সিরিয়াল কি করে এতটা রিগ্রেসিভ হতে পারে!”একই সাথে অভিনেত্রী আরো বলেন যে “আমি এই ধারাবাহিকটি করতে রাজি হয়েছিলাম একটাই কারণে, খুব সুন্দর একটা গল্প ছিল। আমাকে যে ক্যারেক্টার ব্রিফ দেওয়া হয়, সেটার সাথে পর্দায় দেখানো ঘটনার কোন মিল নেই, যে মাত্রায় নোংরামো দেখানো হচ্ছে, তাতে বাধ্য হয়ে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।”

একই সাথে জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী আরো বলেন যে ছেলের বউকে চড় মারতে হবে এমন কথা শোনবার পরই আপত্তি জানান তিনি এবং ধারাবাহিক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। অভিনেত্রীর কথায় তিনি অনেকবার চ্যানেলকে অনুরোধ করেন কিন্তু তারা যুক্তি দেখিয়েছিল টিআরপির জন্য এটা করতে হবে এরপর তিনি ধারাবাহিকের প্রযোজক নিশপাল সিংকেও বিষয়টি জানান, কিন্তু তারা বলেন এসব ক্ষেত্রে চ্যানেলের সিদ্ধান্তই গ্রাহ্য হয়, ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে ধারাবাহিকের কাহিনী ও নিজের চরিত্রটি নিয়ে তার সমস্যা হচ্ছিলো, অভিনেত্রী জানান প্রতিদিন সেট থেকে ফিরে মন খারাপ হয়ে যেত তার, ভাবতেন কি ধরনের চরিত্র করছেন তিনি, এমনকি বাড়ি ফিরে এসে তিনি কাঁদতেন পর্যন্ত।তাই শেষে বাধ্য হয়ে ধারাবাহিকটি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি।

তার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে দর্শক সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন যে, তিনি যা করেছেন একদম ঠিক কাজ করেছেন, অত্যন্ত আত্মসম্মান রয়েছে বলেই এই কাজটি তিনি করতে পেরেছেন, সবাই পারেন না।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন নেটিজেন রূপা গাঙ্গুলীর বলা সেই কথার ছবি তুলে ধারাবাহিকের সমালোচনা করে বলেছেন যে, বাজারে চলছে বলেই যে নোংরামো দেখাতে হবে এমনটার কোন মানে নেই, এসব না দেখিয়েও যে চ্যানেল টপার হওয়া যায় তা একটি ধারাবাহিক (মিঠাই) প্রমাণ করেছে। ঐ নেটিজেন লিখেছেন যে,“’মেয়েবেলা’ ধারাবাহিকটি শুরু হয়েছিল মেয়েদের চাওয়া-পাওয়া, জীবনের আকাঙ্খা, অপূর্ণ স্বপ্ন, তাদের জীবনের ওপর ফোকাস করে, কিভাবে একটা মেয়ের জীবন সুখ-দুঃখ-সংসার-সমাজ এসব নিয়ে আবর্তিত হয় এই কনসেপ্ট নিয়ে, এখন সেই মূল বক্তব্য থেকে সরে এসে নিতান্তই একটা থার্ড গ্রেড শাশুড়ি-বৌমা-পরকীয়া কূটকচালিতে এসে ঠেকেছে, কোন গল্প নেই, শুধু হেঁসেলে বসে কয়েকটা ঘেন্না লাগার মত ডায়লগ

কেউ কেউ এই গ্রুপেই বলছে সব নাকি টিআরপি-র জন্য জরুরি, আমি নিজে ধারাবাহিক একদমই দেখি না, এটার ইউনিক কনসেপ্টের জন্যই দেখতে শুরু করেছিলাম, কিন্তু টিআরপি-র এই দোহাই মানা যায় না, বেশি সিরিয়াল না দেখলেও আমি জানি একটা জনপ্রিয়, বিখ্যাত সিরিয়ালে (এই গ্রুপে অন্য সিরিয়ালের নাম টা সরাসরি নিচ্ছি না) নায়ক-নায়িকার প্রপার লাভস্টোরি শুরু-ই হয়েছিল 400 তম এপিসোডের পর থেকে, কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই সিরিয়াল টানা 37 সপ্তাহ টিআরপি তালিকায় বেঙ্গল টপার হয়েছিল, আর সেই সিরিয়াল টোটাল 56 বার বেঙ্গল টপার হয়েছিল, ভাবা যায়?
তাই এখনই কেউ চাইছে না যে আজই ডোডো মৌয়ের প্রেমে হাবুডুবু খাক, সেটা সত্যিই অ্যাবসার্ড হবে, কিন্তু আরো হাজার একটা জিনিস দেখানো যেত তো, যেটা সমাজকে একটা বার্তা দিত মেয়েদের স্ট্রাগল নিয়ে।

তাই এই দোহাই মানা যায় না, এখানেও একটা বড় যৌথ পরিবার ছিল এখানেও কত এরিয়া ছিল এক্সপ্লোর করার মত, কিন্তু তা না করে বিলো এভারেজই হয়ে রয়ে গেল, আর এখন তো এমন এক্সট্রিম নোংরামি দেখাচ্ছে যে আমি মানতে পারছি না”

Related Articles