বাংলা সিরিয়াল

নারী দিবসে ‘সমাজের সকল মিঠাই’কে শুভেচ্ছা! মিঠাইকে উদাহরণ রেখে মেয়েদের এই দিনে অন্য পাঠ পরালেন মিঠাই ভক্ত! লেখনীতে মুগ্ধ প্রত্যেকে সমালোচক থেকে ভক্ত

নারী দিবসে ‘সমাজের সকল মিঠাই’কে শুভেচ্ছা! মিঠাইকে উদাহরণ রেখে মেয়েদের এই দিনে অন্য পাঠ পরালেন মিঠাই ভক্ত! লেখনীতে মুগ্ধ প্রত্যেকে সমালোচক থেকে ভক্ত

বাংলা ধারাবাহিকের(Bengali Serial) মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় এক সিরিয়াল মিঠাই(Mithai)। শুরু থেকে যেভাবে এই ধারাবাহিক দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে এতদিন যাচ্ছে এর জনপ্রিয়তা দ্বিগুণ হচ্ছে। যতই নতুন ধারাবাহিক আসুক না কেন মিঠাইয়ের আসন টলাতে পারেনি কেউ।

হয়তো টিআরপি তালিকাতে সেই ভাবে খেলা দেখাতে পারছে না এই ধারাবাহিক। কিন্তু জনপ্রিয়তা দিক থেকে আজও যেকোনো চ্যানেলের ধারাবাহিককে টেক্কা দেবে মিঠাই। তবে মিঠাই তো শুধুমাত্র একটি চরিত্র এমনটা একেবারেই নয়। তার ভক্ত তো বটেই দর্শকদের কাছেও সমাজের এক আধুনিক নারীর উদাহরণ। যার মধ্যে রয়েছে দায়িত্বশীলতা, সাহস এবং উপস্থিত বুদ্ধি।

সে স্বপ্ন দেখতেজানে এবং নিজের স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে জানে। নিজের মতন করে তেতো সম্পর্কে সমীকরণ বদলাতে পারে সামান্য ভালোবাসা দিয়ে। বাড়ির ব্যবসায় শ্রীবৃদ্ধি আনতে পারে দেবী লক্ষ্মীর মত। মিঠাইরা যখন ঝিমিয়ে যায়। তখন ভাগ্য তাদের সঙ্গে দেখা করায় মিঠিদের। তারা আবার তাদের সাহস ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। লড়াই করে তাদের অস্তিত্বের জন্য।এরকম মিঠাই বা মিঠি শুধুমাত্র ধারাবাহিকেই নয়। বাস্তব জীবনেও রয়েছে প্রচুর। তাই মিঠাই উদাহরণ করে সমাজের মেয়েদের এক দারুন বার্তা দিলেন এক মিঠাই ভক্ত নারী দিবসের দিনে।

তার লেখনীতে উঠে এসেছে,’এক স্বপ্নবাজ দস্যি মেয়ে মিঠাই। জনাইয়ের মেয়ে সে৷ মাথায় মনোহরার হাঁড়ি আর বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে পা রেখেছিলো রাসবিহারীর মনোহরা ধাম এ৷

ব্যাস তারপর আর তার মেয়ে হয়ে থাকা হলো না৷ গোপাল এর কৃপায় কপালে জুটে গেলো একজন তেতো বর৷ সাথে মিললো মিষ্টি কিছু সম্পর্ক। মায়ের আদরের মেয়ে থেকে হয়ে উঠলো শ্বশুর বাড়ির সবার আদরের রানী আমাদের “মিঠাই রানী।”

তার স্পর্শে বদলে গেলো দাদুর রাগী নাতির জীবন। বদলে গেলো বেশ কিছু সম্পর্কে সমীকরণও৷ ধীরে ধীরে হয়ে উঠলো মোদক বাড়ির পাকা গিন্নি৷ বাড়ির ব্যবসায়তেও পরলো লক্ষীর হাতের ছোয়া। বিক্রি বাড়লো, সুনাম বাড়লো৷

এতোকিছুর ভীরে তার স্বপ্নের সেই ছোট্ট দোকান “গোপাল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার” টিই আর গড়ে তুলা হলো না৷ তাতে কি হয়েছে? গোপাল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার গড়ে না উঠলেও গড়ে উঠেছে “মিঠাই হাব”। মিঠাই হাব এর প্রধান স্তম্ভ হয়ে উঠলো আমাদের মিঠাই রানী।

মিঠাইয়ের কোল জুড়ে এলো ছোট্ট গোপাল। পূর্ণতা পেলো তার নারী সত্বা। সংসার, স্বামী, সন্তান বাড়ির ব্যাবসায় সব মিলিয়ে বেশ ভালোই চলছিলো আমাদের মিঠাই রানীর জীবন৷

কিন্তু হঠাৎই জীবনে এলো এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঝড়। সেই ঝড়ে তচনচ হয়ে গেলো মিঠাইয়ের সুখের জীবন। ভাগ্য তার সহায় হলো না৷ স্বামী হারালো সংসার হারালো এমন কি নিজের অস্তিত্ব টুকুনও হারাতে হলো তাকে৷ সর্বহারা হয়ে পেলো এক নতুন পরিচয় “মিষ্টির মা”। নিজেকে এখন সে এই নামেই চেনে৷

ভাগ্য তার সুখের সাথে সাহস, শক্তি, আত্মমর্যাদা সব কেড়ে নিয়ে তাকে বানিয়ে দিলো এক অসহায় নারী৷ যে নারী এক সময় ছিলো রানী মুহুর্তেই সে হয়ে উঠলো নফর দাসের বাড়ির জোগাড়ের বৌ৷ মেয়ে মিষ্টির ভবিষ্যত আর মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকু ধরে রাখার জন্য কতশত কষ্ট, অপমান মুখ বুঁজে সহ্য করতে হচ্ছে তাকে৷

মায়ের এই অসহায়ত্ব সহ্য করতে পারেনা ছোট্ট মিষ্টি। সে মায়ের জন্য লড়তে চায়, মা কে তার প্রাপ্য হক পাইয়ে দিতে চায়৷ কিন্তু সে যে খুব ছোট৷ তার ছোট আঙুল রাঙানি তে যে দুষ্ট দিদা আর কংশ মামা ভয় পায় না৷

মা মেয়ের এই কষ্ট আর সহ্য হলো না গোপাল ঠাকুরের। মিষ্টি আর তার মায়ের হয়ে লড়তে আবির্ভাব ঘাঁটালেন আরো এক নারীর৷ কি তেজ তার! দেখতে যেমন আমাদের মিঠাই রানীর মতো, স্বভাব চরিত্রও আমাদের পুরোনো মিঠাই রানীর মতোই৷ তার তেজ এর কাছে অবশেষে দুষ্ট দিদা আর কংশ মামা কে হার মানতেই হলো।

এইতো “নারী”। একাধারে বাবা মায়ের আদরের মেয়ে, বাড়ির দায়িত্বশীল বৌমা, স্বামীর একান্ত ব্যাক্তিগত নারী, আবার স্নেহমহী মা। শুধু সংসারেই নয় কর্মক্ষেত্রেও রয়েছে নারী দের অবাধ বিচরণ। কখনো নারী নিজের রঙে অন্য কে রাঙায় আবার কখনো ভাগ্যের পরিহাসে নিজেই হয়ে যায় রঙহীন বর্ণহীন।
জীবনের পরিক্রমায় নারীদের পথ চলা মটেও সহজ নয়৷ শত সহস্র ওঠা নামা বাঁধা বিপত্তি মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হয় নারী দের৷ কখনো নারী নিজের জন্য লড়ে তো কখনো অন্যের হয়ে লড়ে৷ আমরা নারী রা বোধহয় নিজেরাও জানিনা আমরা কতটা শক্তিশালী, কত ক্ষমতার অধিকারী।

নারীদের এই বিশেষ দিনে আমাদের সমাজের সকল মিঠাই, মিষ্টি এবং মিঠি কে জানাই অনেক অনেক শুভেচছা এবং শুভকামনা। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল নারী রা৷

দিনটি শুধুই আমাদের।’।

যে লেখা পড়ে এটাই ভক্তরা তো বটেই সমালোচকরা পর্যন্ত ভাষা হারিয়েছে। লেখার প্রশংসা না করে থাকতে পারেননি কেউই। মিঠাই যে সত্যিই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি তাহলে বদলাতে পেরেছে তাতেই খুশি সৌমি ভক্তরা।

Related Articles