“দিদি নম্বর ওয়ান এখন টিআরপির জন্য এসব নোংরা বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বাধ্য করাচ্ছে” – এমনই অভিযোগ তুললেন দিদি নম্বর ওয়ানে খেলতে যাওয়া এক প্রতিবাদী বৌমা! জি বাংলায় সুদীপার পর এবার জনরোষে রচনা
গতকালই সামনে এসেছে চলতি সপ্তাহের টিআরপি লিস্ট। আর সেই লিস্টে দেখা গিয়েছিল নন ফিকশন শোগুলির মধ্যে ৫.৯ পেয়ে ননফেকশন শো ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে দিদি নম্বর ওয়ান এর সানডে ধামাকা পর্ব। কিন্তু আজ তার ঠিক পরের দিন। আর এর মধ্যেই সামনে এলো দিদি নম্বর ওয়ান এর চালাকি। জি বাংলার এই জনপ্রিয় নন-ফিকশন শো প্রচুর দর্শকের খুবই পছন্দের। এই শো বাংলার দিদিদের জীবন যুদ্ধের যে সংগ্রাম তা ছোট পর্দার মাধ্যমে তুলে ধরেন দর্শকের সামনে। কিন্তু এবার জানা গেল সম্পূর্ণ বিষয়টি তাঁদের নিজেদের তৈরি করা। সাধারণ মানুষের জীবন যুদ্ধ অনুপ্রাণিত করে দর্শকদের। কিন্তু নিজেদের শো এর জনপ্রিয়তা তথা টিআরপি বজায় রাখার জন্য নেগেটিভ পাবলিসিটি করছে দিদি নম্বর ওয়ান? জি বাংলার রান্নাঘরের সঞ্চারিকা সুদীপার পর এবার সাধারণ মানুষের প্রশ্নের সম্মুখীন দিদি নম্বর ওয়ান এর সঞ্চালিকা রচনা ব্যানার্জি।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওটি শাশুড়ি বৌমার মধ্যে কার ব্যক্তিগত রেষারেষি নিয়ে খুবই খোলামেলা আলোচনা চলছে মঞ্চে। ভিডিওর শুরুতেই প্রতিযোগী শাশুড়িকে বলতে শোনা যায়, “চাকরিরত বৌমা হলে শাশুড়ির কপাল গেলো পুড়ে”। যদিও ভিডিওতেই তার এই বক্তব্যের পূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন প্রতিযোগী শাশুড়ি।
এই ভদ্রমহিলার নাম শর্মিলা সরকার। নিজের বক্তব্যের পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ভদ্রমহিলা বলেন ধরুন আপনার ছেলে অফিস থেকে ফিরে খেতে খেতে মায়ের সাথে গল্প করছে। আর সেই সময়ে আপনার বৌমা ফিরলেন অফিস থেকে। ছেলেকে মায়ের সাথে গল্প করতে দেখে গড গড করে নিজের ঘরে চলে যাবে। তারপর নিজের মাকে ফোন করে কালো কালো গলায় বলবে? অফিস থেকে তো খেটেখুটে ফিরলাম বাড়িতে, আর এসে দেখি ও মায়ের সাথে গল্প করছে। বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে এখানে মেয়েদের ছোট করা হচ্ছে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা তাদের কর্মজীবন এমনকি তার স্বাধীনতার ওপরেও কটাক্ষ করতে শোনা যাচ্ছে এই শাশুড়িকে। কিন্তু তারপরেও সঞ্চালিকা রচনাকে দেখা যাচ্ছে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে বেশ হেসে হেসেই মজা করছেন। এখানেই প্রথম দর্শক আপত্তি করেন। এত নিচু মানসিকতা নিয়ে শো হোস্ট করছে এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন দর্শক। এমনকি ওই মহিলার মানসিকতা নিয়েও যথেষ্ট সমালোচনা করেছে নেট পাড়া।
কিন্তু আসল ব্যাপারটি ঘটেছে এরপরে। সোশ্যাল মিডিয়ার শাশুড়ি সম্পর্কে তুমুল সমালোচনা শোনার পর সহ্য করতে পারেননি বৌমা। প্রচুর সমালোচনামূলক কমেন্ট এর মধ্যে খুঁজে পাওয়া গেছে সেই ভদ্রমহিলার বৌমার একটি কমেন্ট। যেখানে তিনি লিখেছেন, “কালো শাড়ি পরা যে মহিলাকে দেখছেন উনি আমার শাশুড়ি মা। ওনার মত ভালো শাশুড়ি হয়তো অন্য কেউ পায়নি আর পাবেও না। আপনারা না জেনেই ওনাকে ভুল বুঝছেন। দিদি নম্বর ওয়ান এখন টিআরপি জন্য এসব নোংরা বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বাধ্য করাচ্ছে। দিদি নম্বর ওয়ানে খেলার জন্য ডেকে ওদের পছন্দমত টপিকে ওদের পছন্দমত কথা বলতে বাধ্য করাচ্ছে। এখানে যা যা কথা বলা হচ্ছে সব দিদি নম্বর ওয়ান এর কর্তৃপক্ষের লোকেরা বলতে বাধ্য করেছে। এমনকি কোন টপিক মিস হয়ে গেলে ওনারা স্যুট বন্ধ করে ওই টপিক গুলো আবার বলা করাচ্ছে”।
এই কমেন্ট নেটিজেনদের চোখে পরা মাত্রই জি বাংলার শো দিদি নম্বর ওয়ান এবং সঞ্চালিকা রচনা ব্যানার্জিকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে নেট পাড়ায়। শুধুমাত্র জনপ্রিয়তার জন্য একটি নন- ফিকশন সহকে সবটাই ফিকশনাল করে দেওয়া হচ্ছে? শুধু টিআরপির জন্যই সবটা স্ক্রিপ্টেড করে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? এমনকি প্রশ্ন করা হয়েছে রচনা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধেও। তিনি নিজে ডিভোর্সি বলেই কি শাশুড়ি বৌমার এসব নোংরা টপিক নিয়ে আলোচনা করছেন নিজের শোতে? এবার শুধু এটাই দেখার যে দিদি নম্বর ওয়ান এর সত্যিই দর্শকের সামনে আসার পর রচনার জনপ্রিয়তার অবস্থাও কি সুদীপার মত হবে! আর পরের সপ্তাহে দিদি নম্বর ওয়ানে টিআরপি ঠিক কোন জায়গায় পৌঁছাবে!