বাংলা সিরিয়াল

‘স্বীকৃতির ফ্যান হলেও মেয়েবেলা থেকে অর্পণকেই বেশি মিস করবো!’টেলিভিশন ইতিহাসে এই প্রথম নায়িকার জন্য নয়, নায়কের জন্য খারাপ লাগছে দর্শকের! নিজের অভিনয় দক্ষতায় অর্পন ছুঁয়ে গেছে সকলের মন!

যে কোনো ধারাবাহিক শেষ হলে দর্শকের এক বিরাট অংশ নায়িকা কে আবার কবে নতুন জুটিতে দেখতে পাবেন সেই নিয়ে হাহুতাশ করতে বসেন, ছেলে ভক্তরা যেমন নায়িকাকে দ্বিতীয়বার নতুন প্রজেক্টে দেখবার আশায় থাকেন, মেয়ে ভক্তরাও কিন্তু এই লিস্টে পিছিয়ে থাকেন না, কিন্তু খুব কম ধারাবাহিক আছে যে ধারাবাহিকের শেষ হওয়ার খবরে দর্শকরা নায়িকার জন্য যত না বেশি কষ্ট পেয়েছেন তার থেকেও বেশি কষ্ট পেয়েছেন নায়কের জন্য, ধারাবাহিকের ইতিহাসে এরকম কোন ধারাবাহিক হয়তো খুঁজেও পাওয়া যাবে না, কিন্তু এমনটাই হলো মেয়ে বেলা ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে।

মেয়ে বেলা ধারাবাহিকের নায়িকা স্বীকৃতি মজুমদার আর নায়ক হলেন অর্পণ ঘোষাল, ধারাবাহিকে তাদের নাম মৌ এবং নির্ঝর, দর্শক ভালবেসে তাদের জুটির নাম দিয়েছিল মৌঝর, সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে যে ৫ মাসের মাথাতেই এই ধারাবাহিক শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু মেয়ে বেলা শেষ হওয়ার পরে দর্শক মিস করবেন অর্পণ ঘোষাল কে, ধারাবাহিক শেষ হওয়ার কথা শুনে নায়িকার জন্য নয়, সবার খারাপ লাগছে নায়কের জন্য, এমনকি স্বীকৃতি মজুমদারের ফ্যান ও নির্দ্বিধায় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানাচ্ছেন যে স্বীকৃতির ফ্যান হলেও তার অর্পণের জন্য খারাপ লাগছে। বিষয়টা বেশ অবাক হওয়ার মত তাই না?

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন নেটিজেন লিখেছেন যে,
“চ্যানেল এবং প্রডাকশন হাউসের দোষ অবশ্যই আছে।

তবে, দর্শকের দোষও তার চেয়ে কম নয়। টিআরপি ‌ফেসবুকের ফ্যানপেজে কতোজন আছে দেখে হয়না, সাধারন টিভিতে যে সাধারনের দেখছেন তাদের থেকে মাপা হয়। তাদের দেখার দৃষ্টিতেই – যখন রুপা গাঙ্গুলী ছিলেন তখনও কি খুব ভালো টিআরপি পেতো বা স্লট লিডার ছিলো মেয়েবেলা? যখন নদীর পাড়ে ধুয়া উঠলো কাপড় বদলাতে গিয়ে তখনও কি স্লট লিডার হয়েছে? রুপা যাবার পরে সাময়িকভাবে কাহিনী বিগড়ে গেলো কিন্তু তারপর রবীন্দ্রজয়ন্তী হলো, ডোডো-মৌ এর স্বাভাবিক স্ক্রীন স্পেসও অনেকটা বাড়লো, অনুষ্রী আসার পর বীথি চরিত্রটাও আগের মত এক্সট্রিম লেভেলের শয়তানী করতোনা, তারপরও কি টিআরপি বেড়েছে? নববর্ষের গানের লড়াই হলো, টিআরপি কি বেড়েছে? এতো প্রমোশন হলো গতো এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে, ইন্টারভিউ হলো লীডদের পরপর। টিআরপি কি বেড়েছে?

একটা চ্যানেলে সারাদিনে অনেক রকমের গল্প থাকে, একটা প্রডাকশন হাউসেও। কোনোটা ভৌতিক, কোনোটা হাস্যকর, কোনটা সেকেলে, কোনোটা আধুনিক, কোনোটা কুসংস্কারপন্ন। দর্শক বেছে নেয় সে কি দেখতে চায়। গত কয়েক বছর ধরেই দেখছি এতকিছুর ভীড়ে চড়ম কুসংস্কারাচ্ছন্ন আর নাহলে সুড়সুড়িদায়ক নাটকের কাটতো বেশী, টিআরপি বেশি। চ্যানেল বা প্রডাকশন হাউস আর কতইবা রিস্ক নেবে? তারা রুচি বদলাতে চেয়েছিলো বলেই তো অন্য স্বাদের গল্প এনেছিলো, ইনভেস্ট করেছিলো, যথেষ্ট পরিমান সাধারন দর্শক সেটা নিচ্ছেনা। ফ্রিতে দিলেও এখন অধিকাংশ দর্শক সুস্থ বিনোদন নিচ্ছেনা, সেখানে টাকা খরচ করে যারা বানাবে তাদের দিকটা বুঝতে হবে।

মুখে যতই বলুক টিআরপি ব্যপারে ভাববেনা, দিনশেষে টিআরপি না থাকলে নাটকের স্পন্সর জোটেনা ভালো, স্পন্সর না জুটলে প্রডাকশন সম্ভব নয়। মেয়েবেলা অন্য স্লটে দেখতে পেলে ভালোই লাগতো কিন্তু এমন কোনো স্লটে যদি দিতো যেখানে প্রডাকশন ভালো রাখা সম্ভব নয় তাই ভালো জিনিষগুলোই ছেটে ফেলতে হবে টাইপ প্রডাকশন হবে – তার চেয়ে হয়তো মোটামুটি সুন্দরভাবে শেষ হওয়াই ভালো। অন্ত:ত মৌঝড়ের উপর কোনো কালি লাগবেনা। ”

একই সাথে ওই দর্শক শেষের দিকে লিখেছেন যে, মেয়েবেলা শেষ হলে স্বীকৃতির ফ্যান হয়েও তার ধারাবাহিকের অভিনেতা অর্পনের জন্য খারাপ লাগবে। কারণ টিআরপি ম্যাটেরিয়াল ধারাবাহিকে আবার দেখা যাবে স্বীকৃতিকে কিন্তু অর্পণ যেরকম অভিনেতা, তার দক্ষতা দেখানোর মতো স্ক্রিপ্ট আর টেলিভিশনে আসবে কিনা সেই নিয়ে সন্দেহ আছে তার।

ঐ নেটিজেনের কথায়,“দু:খের ব্যাপার শুধু এই যে, স্বীকৃতি হয়তো শীঘ্রই আবার বড় বাজেটের কিছু নিয়ে টিভিতে ফিরতে পারবে, অর্পনের সে চান্স কম। ও তো আর ম্যাচো হিরো নয়, ও পাক্কা অভিনেতা। ওর মন মিটিয়ে অভিনয় করবার মত স্ক্রিপ্ট সিরিয়ালে আসবেনা আর যদি সেরকম স্ক্রীপ্ট না থাকে তাহলে ওকে নেবার চেয়ে যেকোনো প্রডাকশন হাউস ডায়লগ বলতে গেলে পাউটি লিপস হয়ে যায় মার্কা কোনো বডিবিল্ডার গোছের নায়কই চাবে। স্বীকৃতির ফ্যান হলেও আমি মেয়েবেলা থেকে অর্পনকেই বেশী মিস করবো। হি ডিজার্ভড ফার বেটার।”

Related Articles