বাংলা সিরিয়াল

‘দীপা কৃষ্ণকলি দেখতে সুন্দর বলে কেউ কিছু বলেনি! কিন্তু অরিজিনালি যখন রূপসাগরে মনের মানুষে তথাকথিত ভাষায় অসুন্দর নায়ককে তুলে ধরা হলো তখন‌ই আক্রমণ!’-একবিংশ শতাব্দীতে এসেও উনবিংশ শতাব্দীতে আটকে রয়েছি-রূপসাগরের মনের মানুষের কমেন্ট বক্স দেখলেই বোঝা যায়!

সান বাংলায় সদ্য একটি ধারাবাহিক আসতে চলেছে, এই ধারাবাহিকের নাম রূপসাগরে মনের মানুষ। এই ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে যে, নায়িকা চরিত্র
অভিনয় করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুকমা রায় আর নায়কের চরিত্রে অভিনয় করছেন নবাগত এক অভিনেতা। এই ধারাবাহিকের গল্পটা পুরো অন্যরকম, এখানে দেখানো হবে যে, নায়িকা দেখতে খুব সুন্দর একেবারে পরীর মত আর নায়ক দেখতে তথাকথিত ভাষায় অসুন্দর, কিন্তু ভালোবাসা তো রূপ দেখে হয় না, ভালোবাসা আসলে হয় গুণ দেখে। সম্প্রতি এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় প্রোমো রিলিজ করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, নায়কের মা বলছে, আমার ছেলে অভিরূপের মতো ছেলে খুব কম হয়,যেমন ওর রূপ তেমনি গুণ,আর সিংহের মতো সাহস! আপনি খুঁজে দেখুন তার সমকক্ষ যোগ্য মেয়ে পান কিনা?- এখন এখানে এই প্রোমোটি দেখে প্রচুর মানুষ খিল্লি করেছেন নায়েকের চেহারা নিয়ে! বিষয়টা যতটা না বেশি অমানবিক তার থেকেও বেশি আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। এখনো এই সমাজে অনেক মানুষ আছেন যারা সৌন্দর্যের ভিত্তিতে মানুষকে বিচার করেন- এই বিষয়টাই যেন তুলে ধরল এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় প্রোমো। তাই ধারাবাহিকের প্রোমো রিলিজ করতেই সেই প্রোমোর কমেন্ট বক্স ভরে গেল হাজার‌ও কুৎসিত কমেন্টে- এই কমেন্টগুলোতে নায়কের চেহারা কে নিয়ে অশ্লীল আক্রমণ করা হয়েছে এবং নায়িকার সাথে তাকে মানাচ্ছে না বলা হয়েছে!

কিন্তু এখানে সুস্থ মানসিকতার দর্শকদের প্রশ্ন যে, কৃষ্ণকলি বা অনুরাগের ছোঁয়ার মতো ধারাবাহিক গুলোতে সুন্দর নায়িকাকে রং দিয়ে কালো করা হয় তাতে কোন অসুবিধা থাকে না, কিন্তু যখন ধারাবাহিককে একটু বেশি বাস্তবসম্মত দেখাতে গিয়ে সত্যিকারের অসুন্দর একজন মানুষকে নায়ক হিসেবে দেখানো হচ্ছে তখনই দর্শকের যত অসুবিধা!-কেন অসুন্দরকেও কি নায়ক হতে পারে না? আমাদের বাস্তব জীবনেও তো এমনটাই হয়, তাহলে এত নোংরা মানসিকতার প্রতিফলন কেন কমেন্ট বক্সে?

সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন নেটিজেন লিখেছেন যে,“রূপ নয়,গুনটাই আসল”—এই টপিক গুলো বেকার আনা হয়।কারন এর থেকে মানুষ কোনো শিক্ষাই নিতে পারেনা।” রূপসাগরে মনের মানুষ” সিরিয়ালের নায়ককে কিছু গ্রুপে আর পেজে যা শুরু হয়েছে তাতে করে এটা স্পষ্ট শুধুমাত্র সময়ের সংখ্যাটাই একবিংশ শতাব্দীতে এসে পৌঁছেছে আর মানুষের(যারা নেগেটিভ কমেন্ট করছে) চিন্তাভাবনার বিকাশ ঊনবিংশ শতাব্দীতেই থেমে রয়েছে

একজন মা তার ছেলেকে সবচেয়ে সুন্দর বলেছে বলেও নেগেটিভ কমেন্ট
মায়ের কাছে তার সন্তান সবচেয়ে সুন্দর হবে এটাই স্বাভাবিক।
কোনো বইতে বা গ্রন্থে কি উল্লেখ করা আছে চোখ দুটো পটলচেরা হলেই সে সুন্দর,ছোট ছোট হলে সে বিশ্রী?চোখ তো দেখার জিনিস তার সাইজ দিয়ে সৌন্দর্যের বিচার কিভাবে সম্ভব?
কোথাও লেখা আছে কারোর নাক টিকালো হলেই সে সুন্দর আর বোচা হলে সে বিশ্রী?নাক তো নিশ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষকে জীবিত রাখার যন্ত্র,তার আকৃতির উপর ভিত্তি করে কীভাবে সৌন্দর্যের বিচার করা যেতে পারে।

এর থেকে তথাকথিত সুন্দর কাউকেই ধরে তথাকথিত বিশ্রী মেকাপ করলেই ভালো হত,শুধু শুধু অভিনেতাকে এত মানুষের অপমানের মুখে পড়তে হত না কারন সে ওটা ডিজার্ভ করেনা।
দীপা,কৃষ্ণকলি এরা দেখতে সুন্দর বলে এদের কেউ কিছু বলেনি,যেই একটু অরিজিনালি দেখানোর চেষ্টা করল এসভিএফ অমনি সবার চুলকানি শুরু।
এদের মন মানসিকতা জীবনেও বদলাবেনা।

দেখতে ভুলবেননা #রূপসাগরেমনেরমানুষ
শুধুমাত্র সান বাংলায়”

Related Articles