Stories

পথের পাঁচালী সিনেমার দুর্গা কে মনে আছে? ওই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য উমা দাশগুপ্ত নেননি একটা টাকাও পারিশ্রমিক, রইল সেই খবর

ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন সত্যজিৎ রায়। তার জ্ঞানের আলো শুধু ভারতবর্ষে নয় সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি একাধারে যেমন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন, অপরদিকে চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক এবং লেখক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। তার মূল্যবান সৃষ্ট সিনেমাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো পথের পাঁচালী। এই পথের পাঁচালী নির্মিত হয় ১৯৫৫ সালে।

প্রতিটি বাঙালি মানুষের বড় হয়ে ওঠা এই সিনেমাটির মাধ্যমে। এমন কোনো বাঙালি লোক নেই যে এই সিনেমাটি দেখেননি বা এর নাম শোনেননি। এর পাশাপাশি দর্শক মনে বেশ দাগ কেটেছিল পথের পাঁচালী সিনেমার অপু, দুর্গা চরিত্রগুলি। এখনকার যুগে নানা টেকনোলজি আবিষ্কার হয়েছে। রয়েছেন নানা পরিচালক, চিত্রনাট্যকার। কিন্তু পথের পাঁচালী সিনেমার মতো আর একটি সিনেমাও সৃষ্টি হয়নি বাংলার বিনোদন জগতে। তাই আজ বহু যুগ অতিক্রম করলেও পথের পাঁচালী সিনেমার চরিত্রগুলি আমাদের সকলের মনের মনিকোঠায় স্থান করে আছে।

এই পথের পাঁচালী সিনেমায় আমরা দেখতে পাই দুর্গা নামের মেয়েটি একটি সাধারণ গ্রামের মেয়ে। তবে সে আর পাঁচটা সাধারন গ্রামের মেয়ের মতো নয় সে হলো একটি দস্যি মেয়ে। ভাইয়ের সঙ্গে মিলে এই দুর্গার ফল চুরি, ফুল চুরি ছিল নিত্যকর্ম। প্রাকৃতিক শোভাকে উপভোগ করতে ভালোবাসতো সে। দিদির সান্নিধ্যে এসে প্রকৃতির প্রেমে মুগ্ধ হয়ে ওঠে অপু। তারপর তার মনে আসতে আসতে সাংস্কৃতিক বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। দিদির কাছে থেকেই সাঁওতাল নাচ শেখে সেই ছোট্ট অপু। তারপর দিদি দুর্গার অস্বাভাবিক মৃত্যু অপুর মনে এক ক্ষতের সৃষ্টি করে।

শোনা যায় পথের পাঁচালী সিনেমাটি যখন তৈরি হয়েছিল তখন চলছিল অর্থনৈতিক মন্দা। অর্থনৈতিক মন্দার জন্য বহু কলা-কুশলীরা বিনা পয়সাতে অভিনয় করেছিলেন ওই সিনেমাটিতে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন উমা দাশগুপ্ত। রীতিমতো বিনা পয়সাতেই দুর্গা চরিত্রটিতে অভিনয় করেন উমা দেবী। জনপ্রিয় এই শিল্পীর অভিনয় আজও আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তবে দুঃখের খবর হল উমা দাশগুপ্ত ২০১৫ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

Related Articles