উভয় সংকটে অনুব্রত মণ্ডল! গরু পাচার কাণ্ডের পর এবার ভোট পরবর্তী হিংসায় নাম জড়ালো কেষ্টদার
![](https://www.calcuttastory.com/wp-content/uploads/2022/04/anubrata.jpg)
বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের এখন শাঁখের করাতের মতো অবস্থা। যেদিকেই যাচ্ছেন সেদিকেই পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছে সিবিআই। এমনিতেই গরু পাচার মামলায় জড়িয়ে গিয়েছে তার নাম, সেই পরিস্থিতি থেকে সামলে ওঠার আগেই ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে হাজিরার নির্দেশ দিল সিবিআই। রবিবার সকাল ১১ টার মধ্যে নিজাম প্যালেসে অনুব্রত মণ্ডলকে হাজিরার নির্দেশ দিলো সিবিআই।
সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২রা মে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিনেই বীরভূমের ইলামবাজারের বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই। এই তদন্তভার গ্রহণের পরই সেই ঘটনার এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। রবিবার ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার জন্যই অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করা হয়েছে।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই গরু পাচার মামলায় নাম জড়িয়েছিলো অনুব্রত মণ্ডলের। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এসএসকেএম থেকে অনুব্রত ছাড়া পাওয়ার পরই সিবিআইয়ের কলকাতার অফিসের তরফ থেকে দিল্লিতে যোগাযোগ করা হয় এবং দিল্লিতে আলোচনার ভিত্তিতে শনিবার বিকেলের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অনুব্রত মণ্ডলকে নিজাম পালেসে হাজিরার নির্দেশ দেয়। এরপর প্রশ্নের তালিকাও ঠিক হয়ে যায় এমনকি তৃণমূলের এই দাপুটে নেতাকে দুদফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া হয়। গরু পাচার মামলায় শনিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের মধ্যে সিবিআই অনুব্রত মণ্ডলকে নিজাম প্যালেসেই হাজিরা দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করে যাওয়ার পরও অনুব্রত মণ্ডলের দেখা মেলেনি নিজাম প্যালেসে। তাকে চিনার পার্কের ফ্ল্যাট থেকেও বের হতেও দেখা যায়নি। এমনকি সূত্রের খবর অনুব্রত মন্ডলের কোন প্রতিনিধিও অনুব্রতর অনুপস্থিতির বিষয় সম্পর্কে সিবিআইকে কিছু জানাননি। এরপর সিবিআই আর কোন স্টেপ নেয় নি, তারা কিছুটা অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যেই বিকেল পাঁচটা নাগাদ চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে ঢোকার সময় অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ বলেন, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, আলোচনা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে পুরো বিষয়টি রাজনৈতিক কারণে করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও বিরোধী শিবির কিন্তু এই বিষয় নিয়ে অনুব্রতকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি।সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, গরু পাচার বগটুই সহ নানা ঘটনায় জড়িয়ে আছেন অনুব্রত। সিবিআই এর হাজিরার নির্দেশ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য সিঙ্গেল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চ করেছেন, তাতে লাভবান না হওয়ায় এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। অনুব্রতর এত ভয় কীসের? নাকি নবান্ন পাচ্ছে? একইভাবে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, অনুব্রত হয়তো বাঁচার চেষ্টা করছেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে তার সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। অনুব্রত নিজের দোষ বুঝতে পেরেছেন, তাই পালিয়ে যাচ্ছেন।