রাজ্য

‘পরেশের বাড়ির কুকুর‌ও পড়লেই চাকরি পেতো’ মেয়ের মত ২৫ আত্মীয়কে চাকরি দেওয়া পরেশের প্রসঙ্গে বললেন বিজেপি নেতা!

রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী বেশ বিপাকে পড়েছেন বর্তমানে। তার মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী যে বেআইনিভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশনে চাকরি পেয়েছে তা প্রমাণিত, যার ফলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে অঙ্কিতাকে এবং সমস্ত মাইনেও ফেরত দিতে বলা হয়েছে কোর্ট থেকে। মেয়ের পর একমাত্র ছেলের ডাক্তারি ডিগ্রি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, মাধ্যমিকে তিন চার বার ফেল করার পর কী করে তার ছেলে হীরক জ্যোতি ডাক্তারিতে পাশ করে তা নিয়ে প্রশ্ন শুরু হয়। এখানেই শেষ নয়, বর্তমানে জানা যাচ্ছে শুধু তার একটি মাত্র কন্যা নয়, তার ২৫ জন আত্মীয়‌ও বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছে।

তবে এইবার অভিযোগ হচ্ছে যে বাম আমল থেকেই তিনি দুর্নীতির শরিক। নতুন অভিযোগে শোনা যাচ্ছে যে বর্তমানে তৃণমূল সরকারের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী বাম জমানায় প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা থাকাকালীন অবস্থা থেকেই বেআইনিভাবে অনেক মানুষকে চাকরিতে নিযুক্ত করেছেন। শোনা যাচ্ছে যে বাম আমল থেকে তৃণমূলের আমল পর্যন্ত অন্ততপক্ষে ২৫ জন নিকটাত্মীয়র সরকারি চাকরি করে দিয়েছেন পরেশ অধিকারী।

একসময় প্রাথমিক শিক্ষকতা করা পরেশ চন্দ্র অধিকারীর স্ত্রী মীরা অধিকারী ও সরকারি চাকরিজীবী। সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন তার মেয়ে অঙ্কিতা ও, যদিও সে চাকরি আর নেই। তবে তার আত্মীয়দের মধ্যেও তার কন্যার মতো অনেকেই রয়েছেন যারা পরেশ বাবুর সৌজন্যে চাকরি পেয়েছেন। এই প্রসঙ্গে মেখলিগঞ্জের বিজেপির টাউন মন্ডল সভাপতি বলেন, “আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ এর আগেও করেছিলাম। পরেশ চন্দ্র অধিকারী বাম আমল থেকেই পরিবারকে বিভিন্ন রকম চাকরির সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছিলেন। শুধু সুযোগ-সুবিধা‌ই নয় তার বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন দাদাভাই ভাগ্নে-ভাগ্নি সর্বোপরি মেখলিগঞ্জের প্রায় ২৫ জন আত্মীয়-স্বজনকে বাম থেকে তৃণমূল আমল পর্যন্ত চাকরিতে নিয়োগ করেছেন তার প্রভাব খাটিয়ে। যারা ওর মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন সেই চাকরির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। তার আত্মীয়রাও আগামী দিনে চাকরি থেকে বরখাস্ত হবে‌। মেখলিগঞ্জে তার প্রভাবে এমন কথা কানে উঠেছিল তার বাড়ির পোষা কুকুর যদি ঠিকমতো পড়াশোনা করতো তাহলে হয়তো কোনো পুলিশ একাডেমিতে তার‌ও চাকরি হত।”

সূত্রের খবর অনুযায়ী পরেশ চন্দ্র অধিকারীর ৩ দাদা ও ভাইয়ের মধ্যে অখিল অধিকারী চাকরি করতেন, অখিল বাবুর স্ত্রী
খাদ্য দপ্তরে চাকরি করেন, তাদের মেয়েও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। এখানেই শেষ নয় পরেশ অধিকারীর এক ভাই হরিশ অধিকারীর চার ছেলে সরকারি চাকরি করেন। চারজনের মধ্যে একজন কলেজের ক্লার্ক, বাকি তিনজন খাদ্য দপ্তরের চাকরি করেন।

পরেশ অধিকারীর দুই বোন মায়া ও ছবি অধিকারী দুজনেই আইসিডিএস এর সুপারভাইজার। মন্ত্রীর দুই ভাগ্নের মধ্যে একজন খাদ্য দপ্তরে চাকরি করেন এবং অপর একজন স্কুলের ক্লার্ক। মন্ত্রীর এক ভাগ্নি খাদ্য দপ্তরে চাকরি করেন। তালিকার এখানেই শেষ নয়, পরেশ বাবুর মামাতো ভাই নিরঞ্জন কৃষি দপ্তরে চাকরি করতেন। তার পিসতুতো ভাই ভবেশ্বর অধিকারী প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন এবং তার দুই মেয়ে স্কুলের শিক্ষিকা। পরেশের নাতিরাও সরকারি চাকরি করেন। পরেশ একজন ভাল চিকিৎসক, সেই চিকিৎসকের স্ত্রী স্বাস্থ্য দপ্তরে এবং তার শ্যালক শ্যালিকা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় চাকরি করেন। পরেশের আর একজন শ্যালক জগদীশ রায়ের এক ছেলে ও ছেলের বউ প্রাথমিক বিদ্যালয় চাকরি করেন। পরেশের আরেক শ্যালক উদ্ধব রায় বিডিও অফিসের চাকরি করেন।

Related Articles