রাজ্য

‘পার্থবাবু পদত্যাগ করতে বললেও মুখ্যমন্ত্রী কখনো আপস করতে বলেননি’ দাবি এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন বাবুর!

এসএসসি দুর্নীতি নিয়ে এমনিতেই রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে আছে। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্কুলে ঢুকে ছিলেন তা জানাজানি হয়ে গেছে এবং তাকে এতদিনের সমস্ত মাইনে ফেরত দিতে বলা হয়েছে সাথে চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করার‌ও নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। এস এস সি দুর্নীতি নিয়ে এবার মুখ খুললেন এস এস সি র প্রাক্তন সভাপতি চিত্তরঞ্জন মন্ডল, যা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তি তৈরি হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।

চিত্তরঞ্জন বাবু জানান যে, তিনি যখন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তখন বিভিন্ন সময় নেতাদের কাছ থেকে চিঠি আসতো, তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যক্তিকে চাকরিতে বহাল করার জন্য। কিন্তু এরকম চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মন্ডল। তাই খোদ পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাকে বাড়িতে ডেকে পদত্যাগ করতে বলেন।

বুধবার সন্ধ্যায় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করেছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মন্ডল। চিত্তরঞ্জন বাবু এদিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এসএসসি-র চেয়ারম্যান হিসেবে আমার ওপর নানা ধরনের চাপ আসতো। সেই চাপের সামনে আমি মাথা নত করিনি। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। চাপের সামনে নত না হওয়ায় আমাকে সরতে হবে বুঝতে পেরে তিনি পুনর্বাসনের প্রস্তাব ও দিয়েছিলেন।”

এরপরই পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বিস্ফোরক দাবি করেন চিত্তরঞ্জন মন্ডল, প্রাক্তন চেয়ারম্যান দাবি করেন, “এসএসসি-র চেয়ারম্যান পদটি মনোনীত। ফলে সেই পদে থেকে দলকে একেবারে উপেক্ষা করে চলা যায় না। আমার কাছে নানান রকম চাপ আসতো। যেহেতু প্রমাণ নেই তাই কে চাপ দিত তা আমি বলব না। কিন্তু এটা বলতে পারি আমাকে একদিন তার বাড়িতে ডেকে পাঠান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তখন তিনি তৃণমূলের মহাসচিব। শাসক দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা। তাই তার ডাকে বাড়িতে হাজির হ‌ই। তিনি সেখানে আমাকে পদত্যাগ করতে বলেন।” একই সাথে চিত্তরঞ্জন বাবু আরো বলেন যে সেইদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় তার সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছিলেন যাতে অত্যন্ত কষ্ট পান চিত্তরঞ্জন মন্ডল।

দুর্নীতি রোধে তিনি একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন বলে চিত্তরঞ্জন বাবু বলেন, “দুর্নীতি রোধে আমি একাধিক পদক্ষেপ করেছিলাম তার মধ্যে ছিল কার্বনলেস কপি। যাতে উত্তরপত্রের নকল পরীক্ষার্থীরা বাড়ি নিয়ে যেতে পারে এরপর আমি প্রশ্নপত্রের সঠিক উত্তর প্রকাশ করি যাতে ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি বসে বুঝতে পারে কে কত নম্বর পেতে পারে। সন্দেহ হলে খাতা দেখানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। এমনকি নম্বরের ভুলত্রুটি থাকলে পুনর্মূল্যায়নের জন্য কমিটি ও গড়ি।”

তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে নিয়ে অভিযোগ করলেও ব্রাত্য বসু বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনো তাকে চাপ দেননি এ বিষয়েও তিনি পরিষ্কার বলে দেন। চিত্তরঞ্জন মন্ডলের কথায়, “ব্রাত্য বাবু কখনো আমায় কোনো চাপ দেননি। মুখ্যমন্ত্রী আমায় তার চেম্বারে ডেকে ছিলেন। উনি আমাকে পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন কোন রকমের আপস করবেন না। আপনার সুবিধামতো বা নিয়ম কানুন বাঁচিয়ে রেখে আপনি কাজ করে যাবেন।”

Related Articles