রাজ্য

সুতপার আগে নিজের মাকেই হাঁসুয়া নিয়ে মারতে গিয়েছিল সুশান্ত! ফাঁস হলো আসল রহস্য!

বহরমপুরের ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে হত্যার মামলায় গত দু’দিন ধরে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে আছে। গত সোমবার সন্ধ্যে ছটা নাগাদ হোস্টেলের বাইরে সুতপা চৌধুরীকে হত্যা করে সুশান্ত। দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিন্তু সম্প্রতি কোন কারণে সুতপা সে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যায় যে কারণে সুতপার ওপর রেগে ছিল সুশান্ত। এই দিন সুশান্তর সুতপাকে মারার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিকবার আঘাত করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু এমন কি ঘটলো যে কারণে মালদহের গৌড় মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুশান্ত হাতে অস্ত্র তুলে নিলো? উঠছে সেই প্রশ্ন।

মালদহের গৌড় মহাবিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সের তৃতীয় বর্ষে পড়ত সুশান্ত। ফেসবুকে নিজের অ্যাবাউটে অনেকদিন আগেই সুশান্ত লিখেছিলেন, “ এই Bewafa তোর ওপর একদিন অনেক ভারী পড়বে এমনকি তোর জান পর্যন্ত যেতে পারে ম্যাডামজি”- তা বলে সত্যি সত্যি যে তিনি সেই কাণ্ড ঘটিয়ে বসবেন তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি!ছোট থেকেই মেধাবী রূপে পরিচিত ছিল সে, কিন্তু সোমবার সন্ধ্যার ঘটনার ভিডিও যখন ভাইরাল হয়, তখন দেখা যায় সুতপাকে সামান্য নড়তে দেখে নিচু হয়ে বারবার ছুরি মারছে যুবক, এরকম একটি বীভৎস ঘটনা দেখে সুশান্তের পরিচিত লোকজন রীতিমতো আঁতকে উঠেছেন।

মালদহের মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের খনিবাথানি গ্রামে সুশান্তের পরিবার-পরিজনদের বক্তব্য বেশ কিছুদিন ধরেই তার আচার-আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সুশান্তের ভাই সুরজিৎ চৌধুরী এই প্রসঙ্গে বলেন, “কয়েক মাস ধরে ও বদলে গিয়েছিল। কারো সঙ্গে ঠিকমতো কথাও বলতো না। মায়ের দিকেও হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে গিয়েছে দাদা।” মেধাবী ছেলেকে এইভাবে নিশংস হয়ে উঠতে দেখে হতবাক হয়ে গেছেন শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পুলিশ কনস্টেবল সুশান্তের বাবা। তার কথায়, “পুলিশের চাকরির সুবাদে অনেক অপরাধী দেখেছি। ছেলের কান্ড টা কিছুতেই বুঝতে পারছিনা। কেন‌ই বা ও এমন কান্ড ঘটালো উত্তর মিলছে না।”

এই দিন বহরমপুরের ফাস্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সুশান্তকে যখন তোলা হয় তখন তার বাড়ির কেউ তার পাশে ছিল না। এমনকি প্রথমদিকে তার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য কোনো আইনজীবীও পাওয়া যায়নি। শেষেরদিকে আইনজীবী অলকেশ পাল তার জামিনের জন্য সওয়াল করেন। তখন পুলিশ তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে চাই। এরপর বিচারক নীলাদ্রি নাথ সুশান্তকে ১০ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন কখনো ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে থেকে শুরু করে আত্মহত্যা করার কথা বললেও এইদিন সুশান্ত শান্ত‌ই ছিল। বেরোনোর সময় সে শুধু বলেছিলো,“ ফেসবুক লাইভ করে যা বলার বলব।”

Related Articles