রাজ্য

সরকারি হাসপাতালের খাবারে কেঁচো! অনেকে না জেনেই খাবার খেয়ে ফেলেছেন! জানতে পেরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক!

মানুষ সব সময় খাবার সম্পর্কে অতিরিক্ত পরিমাণে সচেতন থাকেন কারণ খাবার থেকেই নানারকম বিষাক্ত জিনিস আমাদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে। খাবারের বিষক্রিয়ার ফলে নানান রকম রোগ ঘটে এমন কি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই সব সময় মানুষ খাবার দাবারটা ভালো খাওয়ার চেষ্টা করেন। সম্প্রতি জলপাইগুড়ির জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের খাবার নিয়ে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে যে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। খাবারে মিলেছে কেঁচো‌। এই ঘটনার জেরে অনেক রোগীর আত্মীয় হাসপাতালে সরবরাহ করা খাবার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

সমগ্র ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে তা বলাই বাহুল্য। কীভাবে খাবারে কেঁচো এল সেই ঘটনা তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অসীম হালদার। শনিবার রাত্রে বেলায় হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা খাবারের মধ্যে কেঁচো পাওয়া যায়। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে শিশুর বিভাগের রোগীর খাবারের মধ্যে এই কেঁচো প্রথম নজরে আসে এক অভিভাবকের। কিন্তু ততক্ষণে অনেক চিকিৎসাধীন শিশুদেরকেই সেই খাবার খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই ঘটনাটি জানাজানি হতে রীতিমতো হুলুস্থুল কান্ড শুরু হয়ে যায়।

কারণ কেঁচো পরা খাবার অনেকেই খেয়ে ফেলেছে। তাই অনেকের‌ই এর ফলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। এই বিষয়টি জানাজানি হতেই হাসপাতালের বাইরে অভিভাবকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এমনকি ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরে গিয়ে তারা বিক্ষোভ জানান। শনিবার এই ঘটনা ঘটার পর রবিবার অনেকেই হাসপাতালের সরবরাহ করা খাবার নেন নি। তারা বাড়ি থেকে খাবার আনিয়েছেন অথবা বাইরে থেকে খাবার জোগাড় করেছেন।

এই প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে যে, একটি ঠিকাদার সংস্থা হাসপাতালে খাবার সরবরাহ করে তাদের নজরদারির অভাবের ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। রাজগঞ্জের কুকুরজান এলাকার বাসিন্দা দীপক রায় বলেন অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে তিনদিন ধরে শিশুবিভাগের রয়েছেন স্ত্রী জ্যোৎস্না রায়। হাসপাতালের‌ই খাবার খাচ্ছিলেন তিনি। শনিবার রাত্রিবেলা স্ত্রী দেখতে পান খাবারের মধ্যে পড়ে রয়েছে কেঁচো। ঘটনাটি হাসপাতলে জানাজানি হতেই হইচই পড়ে যায়, অন্যদিকে পঙ্কজ বর্মন নামে এক রোগীর আত্মীয় অভিযোগ করেন যে তিন বেলা খাবার দেওয়া হয় ঠিকই তবে তা অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার। কেঁচো পড়ার পর অনেকেই সেই খাবার নিতে অস্বীকার করেছেন। তিনি ও তার চিকিৎসাধীন আত্মীয়ের জন্য বাইরে থেকে খাবার কিনে এনেছেন।

হাসপাতালের খাবার সরবরাহকারী ওই সংস্থার দায়িত্বে থাকা শুভময় সাহা এই ঘটনার পর বলেন খাবারের মান যাচাই করার পরেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তা সরবরাহ করা হয় কর্মীরা ভালোভাবে যাচাই করার পরে খাবার নিয়ে যান কিভাবে এই ঘটনা ঘটতে পারে তা ভেবে তারা অবাক হয়েছেন। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অসীম হালদার জানিয়েছেন তিনি এখন‌ও অবধি লিখিত কোন অভিযোগ হাতে পাননি। তবে ঘটনা জানতে পেরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Related Articles