দেশ

‘মুসলিমদের মারতে হাতে অস্ত্র তুলে নিন’ জামিনে মুক্তি পেয়েই ফের গণহত্যার নিদান ধর্মগুরুর

কথায় বলে ঠেলার নাম বাবাজি! কিন্তু ঠেলায় পড়লে সকলে পরিবর্তন হয় না! ঠিক যেমন ধর্মগুরু যতি নরসিংহানন্দ। এর আগে একটি ধর্ম সভায় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য ‌ বলার অভিযোগে জেল খাটতে হয়েছিলো এই ধর্মগুরুকে, কিন্তু এতকিছুর পর‌ও ক্ষান্ত হন নি তিনি। জেল থেকে বেরিয়ে পুনরায় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আপত্তিজনক ও উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য রেখে ফের বিতর্কিত হয়েছেন যতি নরসিংহানন্দ। সম্প্রতি হিমাচলপ্রদেশে অনুষ্ঠিত এক ধর্মসভায় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য পেশ করার অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধে।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর অনুযায়ী, হরিদ্বারে হওয়া ধর্ম সভার মতই হিমাচল প্রদেশের উনায় একটি গোপন ধর্ম সংসদের আয়োজন করা হয়েছিলো। যেখানে বিতর্কিত ধর্মগুরু যতি নরসিংহানন্দ মুসলিম নিধনে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার নিদান দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এই ধর্মসভায় তিনি মুসলিমদের মারতে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার কথা বলেছেন।

এই ধর্মসভার অন্যতম আয়োজক সত্যদেব সরস্বতী বলেন,“‌ আমরা কোন‌ও আইন মানি না। কাউকে ভয় পায় না। কারন আমরা কোন ঘৃণা ভাষণ দিচ্ছি না।” সংবাদমাধ্যম সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ঐ ধর্ম সভায় উপস্থিত প্রত্যেক বক্তাই মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য পেশ করেছিলেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতবছর হরিদ্বারে হাওয়া একটি ধর্ম সভায় প্রকাশ্যে মুসলিম গণহত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তার নামে। যে কারণে যতি নরসিংহানন্দকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিছুদিন আগেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তিনি যে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন সেই জামিনের শর্ত‌ই ছিল, আর কখনো তিনি হরিদ্বারের মত ঐ রকম ধর্ম সংসদে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কিন্তু জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই হিমাচল প্রদেশের ধর্ম সভায় যোগ দিয়েছেন তিনি, তাই স্বাভাবিকভাবেই শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে।

যদিও হিমাচল প্রদেশের ধর্ম সভার আয়োজকদের বক্তব্য অনুযায়ী যতি নরসিংহানন্দ নির্দোষ। কারণ ঐ সভাটি হরিদ্বারের সভার মত প্রকাশ্য কোন জন সমাবেশ ছিল না, এটি একান্ত ব্যক্তিগত একটি আলোচনা ছিলো, তাই ব্যক্তিগত একটি আলোচনায় যোগ দিয়ে তিনি পুলিশের নিয়ম ভঙ্গ করেননি। আয়োজকরা আরও জানিয়েছেন যে,‌‌ শর্ত ভঙ্গ হয়নি বলেই, পুলিশও বিতর্কিত ঐধর্মগুরুর বিরুদ্ধে কোনো রকম পদক্ষেপ করেননি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হরিদ্বারের ধর্মসভায় ইসলামের বিরুদ্ধে উত্তেজনাপূর্ণ বিবৃতি দেওয়ার কারনে যতিনরসিংহানন্দ ছাড়াও জিতেন্দ্র ত্যাগীকেও গ্রেপ্তার করেছিলো পুলিশ। এছাড়া ও বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী উদিতা ত্যাগী এবং বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়, হিন্দু রক্ষা সেনার প্রবোধানন্দ গিরি সহ অনেকেই হরিদ্বারের ধর্ম সভায় উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই প্রকাশ্যে সংখ্যালঘুদের গনহত্যার ডাক দিয়েছিলেন বিতর্কিত ধর্মগুরু।

Related Articles