করোনার মতো অসংখ্য মহামারী ধেয়ে আসছে ভারতের দিকে! আগামীতে ভারত অতিমারির আতুঁড়ঘর হয়ে উঠবে বলছেন বিজ্ঞানীরা
ভয়ঙ্কর করোনা মহামারী এমনকিতেই ত্রাস হয়ে উঠেছে। বিগত দুই বছর ধরে এই একটি ভাইরাস বিশ্বসুদ্ধ মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। তবে এই করোনা ভাইরাসই শেষ নয়, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পৃথিবীতে আরো বহু নতুন নতুন ধরনের জীবাণু সংক্রমণের সৃষ্টি হবে এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানী মহল। যে সমস্ত জীবাণু গুলো সৃষ্টি হবে নতুন করে আবার সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলি অতিমারির চেহারা নিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীরা।
অনেক ভাইরাস মানুষকে চরম বিপদের মুখে ফেলতে পারে আর সেই বিপদের দিকে এগোনো ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীমহল।
সম্প্রতি নেচার পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে যেখানে বিজ্ঞানীমহলের এই আশঙ্কার কথা প্রকাশ পেয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে পৃথিবী প্রায় ১৫০০ অতিমারির মুখোমুখি হতে পারে। অতিমারির আঁতুড়ঘর হয়ে উঠতে পারে ভারতবর্ষ, ভারত ছাড়াও আরো যে দেশটি ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে খবর হয়েছে, সেই দেশটি হলো ইন্দোনেশিয়া।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন এইসবের পেছনে সবথেকে বড় ভূমিকা নেবে, এর সাথে জনঘনত্বের বাড়বাড়ন্তও মারাত্মক ভূমিকা নেবে এই অতিমারির ক্ষেত্রে।
এই গবেষণাপত্রের মধ্যে পাঁচটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল। সেগুলো নিম্নে লেখা হলো-
১. গরম যত পরিমাণ বাড়বে বিভিন্ন প্রাণী তাদের পুরনো বাসস্থান ছেড়ে আরো শীতল পরিবেশের দিকে যাত্রা করবে তাতে তারা নতুন বিভিন্ন প্রাণীর সামনাসামনি হবে তাতে এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীর শরীরে জীবানুর যাতায়াত হবে আর এই মিউটেশনের ফলে জন্ম নেবে নতুন নতুন জীবাণু তার অনেকগুলি অতিমারির সৃষ্টি করবে।
২. করোনাকালে আরো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে zoonotic studies এর গুরুত্ব। এই বিজ্ঞানে মূলত এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীর শরীরে জীবাণুর যাতায়াত, মিউটেশন ও নতুন অতিমারি সৃষ্টির কার্যকারণ ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। আগামী সময়ে এই বিজ্ঞানই বলে দেবে মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কা কতখানি বাড়ছে।
৩. বিশ্বের মধ্যে আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশেই এই ভাবে বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে জীবাণুর যাতায়াত দেখা যাবে। এইসব দেশে জনঘনত্ব, জনসংখ্যা অন্যান্য মহাদেশের দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটবে। এই রিপোর্টে বিশেষ করে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার উল্লেখ করা হয়েছে।
৪. বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে এই জীবাণু যাতায়াতের ঘটনাটি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, এটিকে আর কোনভাবেই আটকানো যাবেনা। তবে বিজ্ঞানীদের মতে অনুসারে এখন কার্বন এমিশন কমিয়ে বা বিশ্ব উষ্ণায়নকে ঠেকিয়ে দিলেও এই প্রক্রিয়ার গতি কমে যাবে, কিন্তু একে আর আটকানো যাবেনা।
৫. বাদুড়ের মতো প্রাণীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই এই জাতীয় জীবাণু ভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে। এরপর গরম যত বাড়বে বাদুড়ের মধ্যে থেকে জীবাণু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে। সব মিলিয়ে বলা যায় যে আগামী বছর গুলো মানুষ ও প্রাণীর জন্য খুব একটা ভালো হবে না।