দেশবিদেশ

অ্যাম‌ওয়ে কোম্পানির ওপর জালিয়াতির অভিযোগ! কয়েকশো কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

বিপণন জগতের একটি বহুল প্রচলিত নাম হলো Amway. অনেক মানুষ এই কোম্পানির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত অনেকে আবার পরোক্ষভাবে এই কোম্পানির প্রোডাক্টের উপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি বহুল প্রচলিত এই কোম্পানির বিরুদ্ধেই উঠল জালিয়াতির অভিযোগ! গত সোমবার ইডির তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় যে, তারা মানি লন্ডারিং আইনের অধীনে Amway র ৭৫৭ কোটি টাকার বেশি মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছেন।ইডি তামিলনাড়ুর ডিন্ডিগুল জেলায় থাকা Amway কোম্পানির জমি, কারখানা, ব্যাঙ্ক একাউন্ট, সব‌ই বাজেয়াপ্ত করেছে। একইসাথে ইডির তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, Amway কোম্পানি কোনভাবেই তাদের সম্পত্তি খরচ করতে বা অন্য কোথাও হস্তান্তর করতে পারবেন না।

কিন্তু কীভাবে জালিয়াতি করছে নামী এই কোম্পানি? এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এই কোম্পানিকে একটি বহু স্তরের বিপণন কেলেঙ্কারি চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। ইডির কথা অনুযায়ী, মাল্টিলেভেল নেটওয়ার্কের আড়ালে এই কোম্পানি আসলে জালিয়াতির ব্যবসা করছে আর সাধারণ মানুষকেও ভুলভাল বুঝিয়ে নিজেদের সদস্য হিসেবে এই কোম্পানিতে যোগ করা হচ্ছে।

আসলে বাজার চলিত যেকোনো নামীদামী কোম্পানির তুলনায় Amway র প্রোডাক্ট গুলির দাম অনেকখানি বেশি আর সাধারণ মানুষ যে সেই বর্ধিত দামের বিষয়ে জেনেও সদস্য হিসেবে যোগ দিয়ে এই প্রোডাক্ট গুলি কিনছেন তা কিন্তু ব্যবহার করবার জন্য নয় বরং রোজগার করার তাগিদে। আসলে এই কোম্পানির প্রচারে পণ্যের গুণগত মানের কথা বলার চাইতে বারংবার সাধারণ মানুষকে বোঝানো হয় যে, কীভাবে তারা এই কোম্পানির সদস্য হয়ে রাতারাতি বড়লোক হতে পারবেন। সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করানো হয় এই Amway প্রোডাক্ট কেনার জন্য নতুন সদস্য যোগাড় করে আনতে এবং এই নতুন সদস্যদের জয়েন করানোর ফলেই যে তারা মোটা অংকের কমিশন পাবেন তাও বোঝানো হয়। এইসকল সদস্যরা যে কমিশন পান, সেই কমিশন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে ভালো রকমের অবদান রাখে।

তবে এই সকল অভিযোগের বিরুদ্ধে Amwayর তরফ থেকেও বিবৃতি জারি করা হয়েছে। এইসকল অভিযোগকে ভ্রান্ত বলে দাবি করার পাশাপাশি এই ভ্রান্তির কারণে যে তাদের ব্যবসার সাথে জড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হবে তা তারা জানিয়েছেন। Amway কোম্পানির তরফ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন তাই আমরা আর মন্তব্য করতে চাই না। আমরা আপনাকে সর্তকতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ করছি‌। আমাদের ব্যবসা সম্পর্কে একটি বিভ্রান্তিকর ধারণা বিবেচনা করে দেশের ৫.৫ লাখের‌ও বেশি সরাসরি বিক্রেতার জীবিকাকে প্রভাবিত করে।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইডির তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় অ্যাম‌ওয়ে কোম্পানির মোট সম্পদের মধ্যে ৪১১.৮৩ কোটি টাকার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি এবং এছাড়া ৩৬ টি একাউন্টে মোট ৩৫৪.৯৪ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স
বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

Related Articles