বাংলা সিরিয়াল

‘নিখোঁজ নয়, পাহাড় থেকে পড়া নয়, অসুস্থতায় মারা গেছে অমিতাভ! মেয়েবেলা যেন কোনো আর্ট ফিল্ম’- টিআরপির চক্করে অনন্য এই ধারাবাহিক যেন বন্ধ না হয় আর্জি দর্শকদের

কিছু কিছু ধারাবাহিক থাকে যেগুলো প্রচুর পরিমাণে টিআরপি পায় এবং সেগুলি বছরের পর বছর চলে, কিন্তু এমন কিছু কিছু ধারাবাহিক থাকে যেগুলো সেভাবে টিআরপি না পেলেও মানুষের মনে একটা দাগ কেটে যায়, যেমন কাদম্বিনীর মতো কিছু ধারাবাহিক, হয়তো দীর্ঘ সময় ধরে চলেনি কিন্তু যেটুকু সময় চলেছে সেই সময় এই ধারাবাহিক অসংখ্য দর্শক তৈরি করেছে আর দর্শকদের মধ্যে নিজের একটা অন্য রকমের চাহিদা তৈরি করেছে। কাদম্বিনীর মতো অন্য ধারার ধারাবাহিক গুলো যখন আসে তখন বোঝা যায় সব দর্শক কূটকাচালি যুক্ত ধারাবাহিক দেখতে পছন্দ করেন না, কিছু কিছু মানুষ মুক্ত চিন্তার দিশারী হন যারা কাদম্বিনীর মতো ধারাবাহিকগুলি পছন্দ করেন। কাদম্বিনীর মতোই একটি ধারাবাহিক হলো সম্প্রতি স্টার জলসার মেয়েবেলা।

গৌরী এলোর মতো জমজমাট ধারাবাহিকের বিপরীতে এই ধারাবাহিক হয়তো সেই ভাবে টিআরপি তুলতে পারেনি তবে দর্শকদের মনে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই ধারাবাহিক তার নিজস্ব একটা চাহিদা তৈরি করেছে। আলাদা ধরনের গল্প সাধারণ বাস্তব সম্মত কনটেন্ট এনে এই ধারাবাহিক প্রমাণ করে দিয়েছে দর্শক এখনো আলাদা কিছু খোঁজেন। তাইতো স্টার জলসায় মেয়েবেলা আসার পর থেকেই একদল দর্শক এই ধারাবাহিকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিছু মানুষ বলেন,‘মেয়েবেলা এতটাই বাস্তবসম্মত যে এই ধারাবাহিকটি দেখতে দেখতে মনে হয় সিরিয়াল নয় কোন আর্ট ফিল্ম দেখছি’

বিশেষত মৌ এর প্রথম প্রেম মৌ এবং অমিতাভের পার্ট টাই, অনেকেই ভেবেছিল যে অমিতাভ হয়তো এমন ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবে যে পরবর্তীকালে সে আবার ফিরে আসবে কিন্তু ধারাবাহিকে সম্পূর্ণ অন্যভাবে প্রেজেন্ট করা হয় একটা বাস্তবসম্মত বিষয়কে। বিয়ের কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যায় অমিতাভ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন নেটিজেন লিখেছেন যে,“ আমি নিজে ভীষণভাবে নির্ঝর ও মৌ এর জুটির ভক্ত কিন্তু একটা কথা না বলে থাকতে পারছি না। এই সিরিয়ালটা সত্যিই অন্য সিরিয়ালদের থেকে এখনও পর্যন্ত অনেক আলাদা। আমি ভেবেছিলাম হয়তো চিরাচরিতভাবে সব জায়গায় যেটা দেখায় সেটাই দেখাবে যে অমিতাভ খুব খারাপ ছেলে, যে মৌকে ঠকিয়েছে। হয়তো সংসারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালিয়েছে। অথবা গুলি খেয়ে নিহত হয়েছে কিংবা অমিতাভকে কেউ খুন করেছে, অমিতাভ খাদে পড়েছে ইতি ইত্যাদি। কিন্তু এই ঘটনাটা দেখার পর যেন মনের মধ্যে কোথায় দাগ কেটে গেল। সত্যিই অনেক মানুষদের সদ্য বিবাহিত জীবনসঙ্গী এভাবেই মারা যান। স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক জাতীয় ঘটনা খুবই বাস্তব। এই বেদনাগুলোর কোনোদিন ভোলা যায়না, অথচ কি বাস্তব।

অর্ণ মুখোপাধ্যায় কে দেখে চমকে গেছিলাম। তখনই মনে হয়েছিল চরিত্রটায় অন্য কিছু আছে। ইনি যে-সে লেভেলের অভিনেতা নন। যথেষ্ট উন্নত মানের একজন থিয়েটার অভিনেতা। আজেবাজে চরিত্রে অভিনয় করবেন বলে মনে হয় না। তিনি যে সিরিয়ালে অভিনয় করবেন সেটাও ভাবতেই পারিনি। এনার Current কিছু সিনেমাও বেশ নাম করা। যাই হোক। সিরিয়ালটা যখন বাস্তব কেন্দ্রীক করার প্রতিশ্রুতি লেখিকা দিয়েছেন তখন যেন গল্পটা বাস্তব কেন্দ্রিকই থাকে। টিআরপির চাপাচাপিতে অমিতাভর মতো একটা চরিত্রকে আবার ফিরিয়ে এনে, তাকে মৃত থেকে আবার বাঁচিয়ে তুলে তার চরিত্রকে নেগেটিভ করে নতুন করে নোংরামো শুরু করবেন না বলেই মনে করি। থাক না কিছু বাস্তবিক কষ্ট মনের মধ্যে তোলা, সবই কি টিআরপি রেসে শেষ করে দিতে হবে? এবার দেখা যাক।”

Related Articles