টলিউড

বেঁচে থাকতে কাজ পান নি চলে যাওয়ার পর ন্যাকামো মার্কা পোস্ট! শ্রীলা মজুমদারের মৃত্যুর পর হৈচৈ নিয়ে মুখ খুললেন পারমিতা মুন্সী, অনুজিতের মত রুপোলী পর্দার মানুষরা!

গত‌ ২৭ শে জানুয়ারি বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদারের প্রয়াণের সাথে সাথে চলচ্চিত্র জগতের এক ইন্দ্রপতন ঘটেছে। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে পরশুরাম, একদিন প্রতিদিন, অকালের সন্ধানে, খারিজের মতো একাধিক কালোত্তীর্ণ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শক মনে দাগ কেটেছেন তিনি, চোখের বালিতে ঐশ্বর্য রাইয়ের কন্ঠ হয়েছিলেন তিনি, নিজস্ব অভিনয় দক্ষতায় অঞ্জন চৌধুরীর মতো পরিচালকদের কমার্শিয়াল চলচ্চিত্রেও তার বিরল অভিনয় রূপালী পর্দার জগতে এক দাগ কেটে গেছে।

তাই স্বাভাবিকভাবেই তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে গেছে চলচ্চিত্র জগৎ! ঋতুপর্ণা,মুনমুন সেন থেকে শুরু করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বড় বড় দিকপালরা তার মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন। কিন্তু শ্রীলা মজুমদারের মৃত্যুর সাথে সাথে আরেক শ্রেণীর মানুষ আবার প্রশ্ন তুলেছেন!

যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেন তার মূল্যায়ন হয় নি,কেন জোটে নি কাজ? বেঁচে থাকাকালীন অভিষেক চ্যাটার্জীর মতো শ্রীলাও ভালো কাজ পান নি, তাই তার প্রয়াণের পর ঘুরে ফিরে আসে সেই প্রশ্ন। বাংলা চলচ্চিত্রের একজন ডাইরেক্টর ও প্রডিউসার পারমিতা মুন্সী তার ফেসবুক পেজে এই প্রসঙ্গে লিখেছেন যে,“শ্রীলা মজুমদার মারা যাওয়ার পর, তাকে নিয়ে আক্ষেপের জোয়ার শুরু হয়েছে। তারা যেন হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠে, শ্রীলা মজুমদারের পরিমাপ বুঝতে পেরেছেন!

আরও পড়ুন : কার কাছে কই মনের কথা turned into সাইড রোলেদের বকবক!-মনের কথাতে পরিচিত কাস্টিং গুলোর বকবক বাজে লাগছে দর্শকের!

অথচ তারা কোনদিন শ্রীলা মজুমদারকে নিয়ে কোনও কাজ করেননি। এমনকি শ্রীলাদির শেষ দিনটাতেও দেবদূত, টুম্পাদি, বিদিপ্তাদি, চৈতালীদি, কাঞ্চনা, সুজয় এরা ছাড়া অভিনয় জগতের তেমন কেউ আসেনি। আসেননি, বেশ করেছেন। শ্রীলাদির শেষ যাত্রায় আসার যোগ্যতা আপনাদের নেই। শ্রীলাদির ওয়াশরুমের বাইরে দেহরক্ষী হতে গেলেও যোগ্যতা লাগে। উনি বাংলা সিনেমার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক একটি মুখ। যার পরিমাপ বুঝে তার পাশে থেকেছেন ঋতুদি।

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তার প্রডাকশনের সবকিছুতে শ্রীলাদি কোনো না কোনো ভাবে যুক্ত থাকতেন। এমনকি শেষ দিনটাতেও নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব করল ঋতুদি। রেশমীদির সব কাজেও শ্রীলাদি যুক্ত থাকত। আমার মতো অধমের সৌভাগ্য হয়েছিল শ্রীলাদির সঙ্গে দুটো কাজ করার। রেশমীদির পরিচালনায় “লাইম এন্ড লাইট” সিনেমার স্ক্রিপ্ট আমি লিখেছিলাম। সেই আমার শ্রীলাদির সঙ্গে আলাপ। শ্রীলাদি করছে শুনে, আমি স্ক্রিপ্টটা রিরাইট করেছিলাম।

এরপর Arijit Biswas দার নির্দেশনায়, আমার আর অরিজিৎদার স্ক্রিপ্টে আর আমার কো – প্রডাকশনের ব্যানারে হওয়া “The Sun Goes Around The Earth” বা “সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে” সিনেমায় আমি শ্রীলাদিকে কাস্টিং করেছিলাম। সিনেমাটি ২০১৯ সালে Kolkata international Film festival এর Indian competitive section এ Best Director award পেয়েছিল।

আমাদের বন্ধুত্ব ছিল গভীর।অনেক আগে থেকেই জেনেছিলাম ওনার কর্কটরোগের কথা। তারপর থেকে ওকে ফেস করতে ভয় পেতাম। লক্ষ্মীপুজোর দিন শেষবার দেখা হয় আমাদের। কথা চলছিল আমার “লিপস্টিক” বলে একটা প্রজেক্টে আবার একসঙ্গে কাজ করার। সে কাজ করা হলোনা। এই হিংসুটে, পরশ্রীকাতর, দেখনদারিসার, ওপরচালাক, মেগালোম্যানিয়াক, হদ্দ কুচুটেদের সমাজে, শ্রীলাদি ছিল একটা হীরে। Uncut diamond.”

আরও পড়ুন : উৎসবকে টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে ফেলল রাজনাথ মুখার্জি! ছেলে ঠকিয়েছে, চোখে জল প্রতারিত বাবার

ছোটো পর্দার ওগো নিরুপমা ধারাবাহিক খ্যাত এক অভিনেতা অনুজিৎ সরকার অভিনেত্রীর প্রয়াণে তার ছবি দিয়ে লেখেন,“Sreela দি আজ চলে গেলেন। শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়ে কোনো ন্যাকামি মার্কা পোস্ট করব না।

যখন ছিলেন তখন কাজ ছিলনা,আজ চলে যাওয়ার পর সবার ওনার প্রতিভাকে মনে পড়ছে। বাহ্! অসাধারণ। আপনার দুর্ভাগ্য দিদি,আপনি বাংলায় জন্মেছিলেন,আজ সঠিক জায়গায় জন্মালে আপনি সঠিক সন্মান টা অন্তত পেতেন,আপনার প্রতিভার যথার্থ মূল্যায়ন এখানে হয়নি। এটা বাঙালির দুর্ভাগ্য।”

Related Articles