দেশরাজ্য

মোদীর তেলের দামের পাল্টা গ্যাসের দাম কমাতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী

দিনকে দিন ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে পেট্রোল ডিজেলের দাম। এই কারণে পেট্রোল ডিজেল কিনতে গিয়ে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক বসে ছিল করোনা প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য। সেই সময় আচমকাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পেট্রল ডিজেলের প্রসঙ্গে চলে যান। এবং পেট্রোল ডিজেলের উপর থেকে রাজ্য সরকারের কর কমানোর কথা বলে ওঠেন। তিনি বলেছিলেন ‌ রাজ্য সরকার শুল্ক ছাড় করলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে। এরপর এই তেলের দামকে কেন্দ্র করে রাজ্য আর কেন্দ্রের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়ে যায় এবং পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে রাজ্যের কর কমিয়ে দিতে নিদান দেওয়ার পর‌ই আজ পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের বিরোধিতা করে গলা চড়িয়েছেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর নিশানায় ছিল সাতটি রাজ্য, যার মধ্যে বাংলা ও ছিল, আজ সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রান্নার গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি কে কেন্দ্র করে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সপ্তমে সুর চড়িয়েছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারকে রীতিমতো তুলোধোনা করে তিনি বলেছেন যত শীঘ্র সম্ভব রান্নার গ্যাসের দাম ৩০০ টাকা কমানো উচিত।

কেন্দ্র সরকারকে তোপ দেগে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন,“ এই হারে তেল এবং (রান্নার ) গ্যাসের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। গ্যাসের দাম না কমানো হলে সাধারণ মানুষের সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্র একতরফা ভাবে রাজ্যের উপর দায় চাপাচ্ছে। রান্নার গ্যাসের দাম অবিলম্বে ৩০০ টাকা কমানো উচিত বলে মনে করি। কেন্দ্র তা করছে না কেন?”

এরপরই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে তিনি বিচারপতিদের সম্মেলনে নয়াদিল্লিতে গেলেও তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠক করবেন না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গতকাল বৈঠক চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেন যে কেন্দ্র সরকারের দ্বারা জ্বালানির ওপর কর কমানো সম্ভব হলেও একাধিক বিরোধীদলের এ প্রসঙ্গে উদাসীনতা চিত্র তুলে ধরেন তিনি। একাধিক রাজ্যের পেট্রোল ডিজেল বাবদ কর না কমানো প্রসঙ্গে তিনি এইদিন বলতে থাকেন এবং স্বাভাবিকভাবেই তার এই আক্রমণের থেকে বাদ যায়নি বাংলাও। গতকাল প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীদের বলার কোনো সুযোগ ছিল না, তাই বৈঠক শেষ হতেই নবান্ন থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র সরকারের রাজ্য সরকারকে বঞ্চনা করার কথা বলতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই তিনি ক্রমশ সুর চড়াতে থাকেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে বাংলা ৯৭ হাজার কোটি টাকা পায়। সেই টাকাও কেন্দ্র দিচ্ছে না, এই ৯৭ হাজার কোটি টাকা পেলে তিনদিনের মধ্যেই রাজ্য কেন্দ্রের সব ঋণ শোধ করে দেবে। তেলের প্রসঙ্গ এনে বৈঠককে রাজনীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। নিজেরা লুট করছে আর সমস্ত দায়ভার রাজ্যগুলিকে নিতে হবে এটা সম্ভব নয়।”

গতকালকের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “গত কালকের বৈঠকটি আসলে করোনার কারণে নয় বরং পেট্রোল-ডিজেলের দাম প্রসঙ্গে বিরোধীদের আক্রমণ করার জন্য ডাকা হয়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল যে সকল বক্তব্য রাখেন তা শুধুমাত্র পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাবদ যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তার দায় নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলার কৌশল।”

Related Articles