মানবসেবার ঝোঁক! মৃত্যুর পরেও অঙ্গদান করে তিনজনকে নব জীবন দান করলেন চিকিৎসক সংযুক্তা
![](https://www.calcuttastory.com/wp-content/uploads/2022/05/sangjukta.jpg)
মানবসেবা অর্থাৎ ভগবানের সেবা। কিছু কিছু মানুষ বেঁচে থাকাকালীন সারা জীবন মানুষের সেবা করে যান আবার মৃত্যুর পরেও তারা মানব সেবা করতে চান। হ্যাঁ মৃত্যুর পরেও মানবসেবা সম্ভব নিজের অঙ্গ দানের মধ্য দিয়ে। ঠিক যেমনটা করলেন চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যাম রায়। মৃত্যুর পর তার অঙ্গ দানের ফলে জীবন ফিরে পেলেন আরো তিনজন মানুষ।
শহরে অঙ্গ দানের নজির এই প্রথম নয় এর আগেও বহুবার এই নজির দেখা গেছে। সম্প্রতি মৃত্যুর পর আবার মানব সেবায় ব্রতী হলেন ৪১ বছরের সংযুক্তা। ডাক্তাররা যখন তার ব্রেন ডেথের কথা ঘোষণা করেন, তখন তার পরিবার অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ইতিমধ্যেই সংযুক্তার অঙ্গ দানের ফলে তিনজন জীবন ফিরে পেয়েছেন, আরো একজন জীবনের আলো পেতে চলেছেন।
এন আর এস মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী সংযুক্তা এক বেসরকারি হাসপাতালে নিউরো অ্যানাস্থেটিস্ট হিসেবে চিকিৎসা করছিলেন, আচমকাই ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক কেড়ে নেয় তার জীবন। ৪১ বছরেই থেমে যায় সংযুক্তার পথ চলা। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আধঘণ্টার মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেও বাঁচানো যায়নি সংযুক্তাকে।
বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তার ব্রেনডেথের কথা ঘোষণা করা হলে তার পরিবার অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নেন। গত বুধবার সকাল থেকেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। সংযুক্তা শ্যামরায়ের অঙ্গ গ্রিন করিডরের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয় সেখানেই হয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন। সংযুক্তার একটি কিডনি পৌঁছে যায় এসএসকেএমে, অপর কিডনি টি আই এল এস হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়। সংযুক্তা শ্যামরায়ের লিভার ৬১ বছরের এক পুরুষ গ্রহীতার দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। ৪৫ বছরের আরো একজন পুরুষ গ্রহীতা আরেকটি কিডনি পান। জামশেদপুরের বাসিন্দা ৫২ বছরের এক মহিলার দেহে অপর কিডনিটি প্রতিস্থাপন করা হয়। এখনো সংযুক্তার আরো একটি অঙ্গ সংরক্ষিত আছে। সংযুক্তার কর্নিয়া দিশা আই হাসপাতালে সংরক্ষিত করা হয়েছে, গ্রহীতা পেলেই তা দান করা হবে অর্থাৎ আরো একজন আলো ফিরে পাবে সংযুক্তার দ্বারা।
মৃত্যুর পরও মরেননি সংযুক্তা, তিনি বেঁচে রইলেন এই মানুষগুলোর মধ্যে- এমনটাই মনে করছেন সংযোগ তার নিকট আত্মীয় থেকে পরিবারের লোকজন সকলেই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যামরায়ের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধানে ছিলেন সংযুক্তা শ্যামরায়ের একজন সহকর্মী।