রাজ্য

‘পিকে আমাদের সঙ্গে!’ কংগ্রেসে নয় ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর ঘুরে ফিরে আবার তৃণমূল কংগ্রেসেই

ভারতের রাজনীতির মঞ্চে এখন অন্যতম আলোচিত নাম হলো প্রশান্ত কিশোর। ভোট কুশলী হিসেবে তার জনপ্রিয়তা সর্বাধিক। ২০১৪ এর লড়াইতে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর কোনদিকে থাকবেন তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি মেতে উঠেছিলো জল্পনায়। সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রশান্ত কিশোরের অবস্থান বলে দিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এইদিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন,“ভোট কুশলী হিসেবে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই রয়েছেন।”

উল্লেখ্য বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেস যোগ নিয়ে জোর জল্পনা চলছিল। এমনকি প্রশান্ত কিশোর দফায় দফায় বৈঠক‌ও করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। তবে এই দিন দুই তরফ থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয় যে, পিকে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন না। দফায় দফায় বৈঠকের এই কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেছিলেন যে, ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে সকলেই দলে পেতে চাইছেন।

গত পুরভোটের পর থেকেই আইপ্যাকের সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব নিয়ে বারংবার জল্পনা শুরু হয়েছিল। আইপ্যাকের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছিলো যে, প্রশান্ত কিশোর তাদের সংস্থার কেউ নন। তবুও সেই দাবি কেউ বিশ্বাস করতে চাননি। এই পরিস্থিতিতে প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসে যোগ দেবেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিলো। তৃণমূল, টি আর এসের মত আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গ ত্যাগ করতে চাননি প্রশান্ত কিশোর। এই কারণে কংগ্রেস ও প্রশান্ত কিশোরের উপর ভরসা রাখতে পারেননি। যে কারণে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে ক্রমশ জল্পনা বাড়তেই থাকে।

২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই লেগেছিল। সেই সময় অনেকেই ভেবেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস হেরে যাবে আর বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের মসনদ দখল করবে। সেইসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে জিততে ও বিজেপিকে হারাতে সাহায্য করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। দক্ষিনে ডিএমকে কেও জয় এনে দেয় প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা।

পরবর্তীকালে প্রশান্ত কিশোরের মুখে বারংবার বিজেপিকে সরানোর কথা শোনা যেতে থাকে। যা দেখে সকলেই কংগ্রেসের সাথে তার সম্পর্ক গজিয়ে ওঠার কথা ভাবতে থাকেন। তবে সম্প্রতি কংগ্রেসের সাথে তার সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটেছে। বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথেই তার সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এইদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একইসাথে এটাও মেনে নেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেও প্রশান্ত কুমারের ভূমিকা নিয়ে একটি মতপার্থক্য ছিলো। তবে দলের মধ্যে এটা স্পষ্ট করা হয়েছে যে, প্রশান্ত কিশোর ভোট কুশলী হিসেবে দলের সাথে কাজ করবেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০২১ এর বিধানসভা ভোটের পর থেকেই অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে আইপ্যাক কাজ শুরু করে। এমনকি গোয়াতেও কাজ করে আইপ্যাক। যদিও গোয়াতে তৃণমূল সফল হয়নি তবে ত্রিপুরাতে কিছুটা হলেও এগিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে মেঘালয়ে কংগ্রেস ভাঙিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে উঠেছিল প্রধান বিরোধী দল। অসমেও কংগ্রেসের ভাঙ্গন ধরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ঘর তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শের জন্য যেভাবে বিভিন্ন রাজ্য কংগ্রেসের ভাঙ্গন ধরেছে তাতে স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েছিলো। এদিকে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পর্কে এখনও না ছাড়ায় জাতীয় রাজনীতিতে আগামী বিধানসভায় ঠিকই কামাল হতে চলেছে তা নিয়েও দ্বন্দ্বে রয়েছেন সকলে।

Related Articles